Header Ads

Header ADS

সত্যি কথা-ই বলছি আপনাদের – হুয়ান হোসে অ্যারিওলা | অনুবাদ: জি এইচ হাবীব



মূল লেখক এবং অনুবাদক

সুচের ফুটোর ভেতর দিয়ে উট গলে যাবার দৃশ্য দেখার ব্যাপারে কারও যদি আগ্রহ থেকে থাকে, তাহলে তার উচিত অবিলম্বে ‘নিকলাউস এক্সপেরিমেন্ট-এর পৃষ্ঠপোষকদের তালিকায় নাম লেখানো।

মৃত্যুর কারবারি যে সব বিজ্ঞানী ইউরেনিয়াম, কোবাল্ট এবং হাইড্রোজেন নিয়ে কাজ করেন আর্পাড নিকলাউস মোটেই তাঁদের দলভুক্ত নন । বরং একটি পরহিতকর এবং সাংঘাতিক রকমের মানবিক উদ্দেশ্যে তিনি তাঁর বর্তমান গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর সে উদ্দেশ্যটি হচ্ছে ধনবান লোকজনের আত্মার মুক্তি সাধন।

একটি উটকে কুচি কুচি করে সেটাকে ইলেক্ট্রন প্রবাহের মাধ্যমে সুচের ফুটোর ভেতর দিয়ে চালান করে দেবার এক বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা  গ্রহণ করেছেন ভদ্রলোক। প্রায় অবিকল টেলিভিশন স্ক্রীনের মত দেখতে একটি গ্রাহক যন্ত্র সেই ইলেক্ট্রনগুলোকে পরমাণুতে, পরমাণুগুলোকে অনুতে এবং অনুগুলোকে দেহকোষে বিন্যস্ত করে মুহূর্তের মধ্যেই উটটিকে তার আদি অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে। ইতিমধ্যে নিকলাউস স্পর্শ না করেই এক ফোঁটা ভারি পানিতে স্থানান্তরিত করতে সক্ষ্ম হয়েছেন। উটের খুর থেকে কী পরিমাণ কোয়ান্টাম শক্তি নির্গত হয় সেটাও তিনি বস্তুগত অনুভব যোগ্যতার চূড়ান্ত সীমা পর্যন্ত নির্ণয় করেছেন। তবে সেটার অ্যাস্ট্রনসিকাল হিসেব দিয়ে পাঠককে ভারাক্রান্ত করার কোন অর্থ হয় না।


এ মুহূর্তে একটাই মাত্র গুরুতর সমস্যা। প্রফেসর নিকলাউসের- নিজস্ব অ্যাটমিক প্ল্যান্ট নেই তাঁর । গোটা একটা শহরের মত বিশাল এ ধরনের স্থাপনা অবিশ্বাস্য রকমের ব্যয়বহুল। তবে একটি বিশেষ কমিটি   বিশ্বব্যাপী চাঁদা সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে ইতিমধ্যে এ সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু  করে দিয়েছে ।প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত চাঁদার পরিমাণ যতসামান্য হলেও সে টাকা দিয়েই হাজার হাজার প্যাম্ফলেট, চুক্তিপত, বিস্তারির তথ্য সম্বলিত প্রস্পেক্টাস ইত্যাদির ব্যয়ভার বহন করা হচ্ছে, প্রকান্ড সব গবেষণাগার তৈরি হচ্ছে এবং সেই সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন হিসেব-নিকেশ অ তত্ত্বগত অনুসন্ধানের কাজ চালানোর মত মোটামুটি অঙ্কের একটা মাসোহারা প্রফেসর নিকলাউসের হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

কমিটি এবার শুধু উটেবং সুচের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। উটেরজন্য ক্ষতিকর তো নয়ই বরং স্বাস্থ্যকর (এবং নিকলাউসের ভাষ্য অনুযায়ী, সমস্ত দেহকোষ পুনরুজ্জীবিত হবার সম্ভাবনাযুক্ত) এই প্রকল্প পশু-পাখির প্রতি নিষ্ঠুরতা নিবারণকারী সংস্থাগুলোর অনুমোদন লাভ করায় চিড়িয়াখানাগুলো রীতিমত এক ক্যারাভানভর্তি উট পাঠিয়ে দিয়েছে। নিউ ইয়ররক শহরের চিড়ীয়াখানা তার বিখ্যাত সাদা উটটি পর্যন্ত পাঠাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি।

আর সুচটির ব্যাপারে আপার্ড নিকলাউস তো রীতিইমত গর্বিত। এবং তিনি এটাকে এক্সপেরিমেন্টের সবচেয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করেন। এটা কোনো ফেলনা সুচ নয়, নিকলাউসের দুর্ধর্ষ প্রতিভাবলে আবিষ্কৃত এক অসাধারণ সুচ। প্রথম দেখায় অবশ্যি এটাকে আর দশটা সাধারণ সুচের মতই মনে হবে।
আর নিকলাউসের বউয়ের রসবোধও বলিহারি ! তিনি এ সুচ দিয়েই কর্তার জামা কাপড় সেলাই করে থাকেন ! তবে সে যাই হোক, সুচটির মূল্য অপরিসীম। অসাধারণ এবং এখন পর্যন্ত আনাম্মী এক ধাতুর সাহায্যে সুচটি তৈরী করা হয়েছে। নিকলাউস যদি কোনোরকম ইঙ্গিত প্রায় দেননি বললেই চলে, কিন্তু ধাতুটির রাসায়নিক সংকেত দেখে মনে হয়, এটা একান্তভাবেই নিকেলের কয়েকটি আইসোটপের সংমিশ্রণে গঠিত। রহস্যজনক এই বস্তুটি ইতিমধ্যে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে বিজ্ঞানীদেরকে।
একজন তো হাস্যকর এক তত্ত্ব খাড়া করে বলেছেন, সুচটি নির্ঘাত সিন্থেটিক  অসমিয়াম বা অস্বাভাবিক কোন মলিবডেনাম-এর তৈরী। এদিকে ঈর্ষান্বিত এক প্রফেসরের বক্তব্য জনসমক্ষে  বলে বেড়াচ্ছেন দুঃসাহসী আরেক লোক। প্রফেসর নিশিত করে বলেছেন, সাইডেরাইট-এর ঘন পিন্ডে আবদ্ধ ক্ষুদ্র স্ফটিক গুচ্ছে তিনি নিকলাউস-এর ধাতুটি শনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছেন। যে যাই বলুক, নিশ্চিতভাবে শুধু এইটুকু জানা গেছে যে, শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে ধাবমান ইলেক্ট্রনের সংঘর্ষ সামাল দেবার ক্ষমতা নিকলাউস-এর এই সুচের আছে।

রহস্যময় অংকবিদরা যে ধরনের ব্যাখ্যা- বিশ্লেষণ  পছন্দকরেন সে রকম একটি ব্যাখ্যায় প্রফেসর নিকলাউস সুচের ফুটোর ভেতর দিয়ে গমনরত একটি উটের তুলনা করেছেন মাকড়সার আঁশের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, সেই আঁশ দিয়ে কোন কাপড় বুনলে সেটা বিছাতে মহাশূণ্যের অসীম বিস্তারের দরকার পড়বে এবং দৃশ্যমান অ অদৃশ্য সমস্ত নক্ষত্র সেটায় অসংখ্য শিশির বিন্দুর  মত ধরা পড়বে। নিকলাউস বলেছেন, লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দীর্ঘ সেই ফেঁসো বস্ত্র তিনি সেকেন্ডের পাঁচ ভাগের তিন ভাগ সময়ে গুটিয়ে ফেলতে  সক্ষম।

পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে , প্রকল্পটি কেজো, এবং আমরা এ-অ বলতে পারি, দস্তুরমাফিক বিজ্ঞানসম্মত। লন্ডনের বিখ্যাত ওলাফ স্টেপলডন যে সংস্থার সভাপতি সেই ‘আন্তঃগ্রহ সংঘ’-র সহানুভূতি এবং নৈতিক সমর্থন ইতিমধ্যে পেয়ে গেছে প্রকল্পটি( যদিও এখনও ঠিক অফিশিয়াল অনুমোদন পায়নি)।


নিকলাউসের প্রকল্প চারদিকে একটি স্বাভাবিক প্রত্যাশা এবং উতকন্ঠার জন্ম দেয়াতে কমিটি এই এক্সপেরিমেন্টের দিকে বিশ্ব শক্তিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছে যাতে করে তারা হাতুড়ে বিজ্ঞানীদের সূক্ষ্ম ছিদ্রের ভেতর দিয়ে মৃত উট গলিয়ে দেবার কারসাজি দেখে হাঁ হয়ে না যায়। এই লোকগুলো, নিজেদেরকে যাদের  বিজ্ঞানী বলে দাবি করতেও বাঁধে না, নিতান্তই প্রতারক। অবিচক্ষ্ণ কিছু আশাবাদী লোকের মাথায় কাঁঠাল ভাঙ্গাই এদের উদ্দেশ্য। যারপরনাই স্থুল একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা। বেশ কয়েকবার আগের চেয়ে পাতলা সালফিউরিক এসিডের দ্রবণে উটটিকে দ্রবীভূত করে, তারপর একটি বাষ্প ঘড়ির সাহায্যে সেই তরল পদার্থ ফোঁটায় ফোঁটায় সুচের ফুটোর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত করে; ভাবে, এতে করে বুঝি আলৌকিক কাজটা সমাধা করে ফেলল তারা। যে কেউই বোঝে , এক্সপেরিমেন্টটি নিতান্তই অর্থহীন; অসম্ভব ওই নির্গমন প্রক্রিয়াটির আগে ও পরে উটটিকে অবশ্যই জীবিত থাকতে হবে।

যাদের অনন্ত জীবনের প্রত্যাশা রয়েছে এবং অর্থের চেয়ে কম রয়েছে সেই অর্থ ব্যয় করার উপায়, তাদের উচিত টনকে টন মোমবাতির মোম না পুড়িয়ে দুর্বোধ্য সব দান-দক্ষিণার পেছনে পয়সা- কড়ি খরচ না করে, উট খন্ড-বিখন্ডকরণ-এর মত বিজ্ঞান সম্মত, বর্নিল এবং শেষ পর্যন্ত লাভজনক একটি প্রকল্পে চাঁদা দেয়া। এক্ষেত্রে বদন্যতার প্রসঙ্গ টানা নেহাতই নিষ্প্রয়োজন । স্রেফ চোখ বন্ধ করে উপুঢ়স্ত হতে হবে সবাইকে। কারণ, জানা কথা, প্রতিটি পাই-পয়সা সুদে আসলে উশুল হয়ে ফিরে আসবে । চাঁদা প্রদানকারী সবার পুরষ্কার সমান। কিন্তু জরুরী বিষয়টি হচ্ছে, চাঁদা দেবার শুভক্ষ্ণটি যদ্দুর সম্ভব এগিয়ে আনা।

প্রকল্প বাস্তবায়নে সাকুল্যে কত টাকা দরকার হবে সেটা আগেভাগে বলা সম্ভব নয়, কারণ, প্রকল্পটির পরিমাণ সম্পর্কেও আগে থেকে কিছু বলা যাচ্ছে না। আর তাছাড়া , যে বাজেট আদতেই উদার নয় সে বাজেট নিয়ে কাজ করতে সাধারণত উতসাহ বোধ করেন না প্রফেসর নিকলাউস, আন্তরিক সততার সঙ্গেই তিনি সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। চাঁদা প্রদানকারীদেরকে তাঁদের বিনিয়োগের নির্দিষ্ট অংকটি ধৈর্য সহকারে বেশ কয়েক বছর ধরে দিয়ে যেতে হবে। কারণ, হাজার হাজার টেকনিশিয়ান, ম্যানেজার এবং শ্রমিক নিয়োগ করতে হবে এ কাজে । গড়ে তুলতে হবে আঞ্চলিক এবং জাতীয় উপ-কমিটি। আর সেই সঙ্গে সংবিধি মোতাবেক প্রফেসর নিকলাউস- এর একটি উত্তরাধিকারী পরিষদ গঠনের কথা শুধু আগে থেকে ভেবে রাখলেই চলবে না, সে জন্যে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাজেটও নির্ধারণ করতে হবে। কননা , এক্সপেরিমেন্টটি , যুক্তিসঙ্গত কারণেই, বেশ কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত গড়াতে পারে। এ প্রসঙ্গে বিদগ্ধ নিকলাউস-এর অভিজ্ঞতাপুষ্ট বার্ধক্যের কথাও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।

মানুষের সব পরিকল্পনার মত ‘এক্সপেরিমেন্ট নিকলাউস’-ও সম্ভাব্য দুটো ফলাফলের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে- ব্যর্থতা এবং সাফল্য। নিকলাউসের সাফল্য ব্যক্তিগত নির্বাণ লাভের সমস্যা সমাধান তো করবেই , সেই সঙ্গে এক রহস্যময় অভিজ্ঞতার পৃষ্ঠপোষকবৃন্দকে পরিণত করবে এক অবিশ্বাস্য পরিবহন কোম্পানীর শেয়ার হোল্ডারে। কারণ, তাতে করে, খুব সহজেই, মানুষকে বাস্তবসম্মত উপায়ে এবং কম খরচায় টুকরো টুকরো করে ফেলা যাবে। আগামী দিনের মানুষ চোখের পলকে, নির্ভিঘ্নে, দূর- দূরান্তে  যাতাযাত করতে পারবে।
তবে ব্যর্থতার সম্ভাবনাটিও কিন্তু আরও আকর্ষণীয় । নিকলাউ-এর পরিকল্পনা যদি শেষতক আকাশ কুসুম কল্পনাতেই পর্যবসিত হয়, যদি নিকলাউস-এর মৃত্যুর পর তাঁর মত মহান-মহাজ্ঞানীর পথ অনুসরণ করে একদল প্রতারকও বেরিয়া আসে, তাতেও কিন্তু তাঁর মানবিক প্রকল্পের মাহাত্ম্য জ্যামিতিক হারে কিংবা ক্যারেল সৃষ্ট মুরগির ছানার চামড়ার মতই বেড়ে যাবে। কারণ কোন কিছুই তাঁকে দুনিয়ার লোকের পুঁজিপাটা নিঃশেষে লোপাট করে দেবার মহান আবিষ্কারক হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁয় করে নেয়া থেকে বিরত রাখতে পারবে না । আর তাছাড়া উটটি হয়ত যেতে পারবে না কিন্তু গায়ের রক্ত পানি করে বিনিয়োগের ফলে ক্রমাগত কৃশকায় হতে থাকা ধনবান লোকজন খুব সহজেই সরু দরজা(সুচের ফুটো) গলে স্বর্গে প্রবেশ করতে পারেন।

সংক্ষিপ্ত লেখক পরিচিতি:
হুয়ান হোসে অ্যারিওলা ( Juan Jose Arreola) ১৯১৮ সালে কিউদাদ গুজম্যান, জালিস্কো (মেক্সিকো)- তে জন্মগ্রহণ করেন। চৌদ্দ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ । শৈশবেই লেখালেখি এবং থিয়েটারের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তাঁর। চল্লিশ এর দশকে গুয়াদালাজারায় থিতু হন, সেখানকার বেশ কিছু সাহিত্য পত্রিকায় লেখালেখি করেন। এখানেই অভিনেতা লুই জুভেট- এর সঙ্গে সাক্ষাত ঘটে তাঁর। জুভেট তাঁকে প্যারিস নিয়ে যান। মেক্সিকোয় ফিরে এসে তিনি একটি প্রকাশনা সংস্থায়  বেশ কিছুদিন কাজ করেন। পরে, পঞ্চাশের দশকে ‘ লস প্রেজেন্টস ‘ নামে নিজেই একটি প্রকাশনা সংস্থা খোলেন। পাঠকদের সঙ্গে কার্লোস ফুয়েন্তেসের পরিচয় ‘লস প্রেজেন্টস’ এর মাধ্যমেই। ‘লস ডিয়াস এনমাসকারাডোস’ নামে ফুয়েন্তেসের প্রথম গল্প সংকলন এখান থেকেই বেরোয় ১৯৫৪ সালে। নবীন লেখকদের উতসাহদানের কাজটি ‘লস প্রেজেন্টস ‘ এখনো চালিয়ে যাচ্ছে । অয়ারিওলার তিনটি গল্প সংকলন ‘ভ্যারিয়া ইনভেনসিওন’ (‘ভ্যারিয়াস ইনভেনশনস’, ১৯৪৯), ‘কনফাবুলাত্তি’(১৯৫২) এবং ‘পুন্টা ডি প্ল্যাটা’(সিল্ভারট্রিপ’ ১৯৫৮) এক  সঙ্গে নতুন আরও কিছু গল্প যোগ হয়ে ইংরেজীতে ‘ কনফাবুলারিও অ্যান্ড আদার ইনভেনশনস’ নামে ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়। এক অঙ্কের একটি প্রহসন সহ তাঁর চতুর্থ গল্প সংকলন বেরোয় ১৯৭১-এ।

জালিস্কোর একটি ছোট্ট শহরের জীবনকে ব্যঙ্গ করে লেখা উপন্যাস ‘লা ফেরিয়া’ (১৯৬৩) ‘ভিলাউরুটিয়া’ পুরষ্কার লাভ করে। যে সমস্ত মানবিক মূল্যবোধ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে , দ্রুত সেঁকেলে বলে পরিগণিত হচ্ছে যে সমস্ত সামাজিক বিষয়, সেসব তুলে ধরতেই তাঁর ‘উইট কাজে লাগানো ফ্যান্টাসি এবং শ্লেষ ব্যবহারে সিদ্ধহস্ত অ্যারিওলা , অ্যাবসার্ড বা উদ্ভট – অসম্ভব সম্পর্কে শাণিত চেতনার অধিকারী এই লেখক মানুষের দোষ- ত্রুটিকে তুলে ধরেন সবার সামনে।

তিনি এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু , মেক্সিকোর অন্যতম সেরা লেখক অ্যালফনসো রেইএস , ‘গল্প-প্রবন্ধ’ বলা যায় এমন একটি বিশেষ ধরনের লেখার ব্যাপারে পারদর্শীতা অর্জন করেছেন এবং অ্যারিওলার হাতে এই ‘গল্প-প্রবন্ধ’গুলো ব্যঙ্গাত্মক একটি রূপ নিয়েছে । অনূদিত গল্পটি তার সেরা গল্পগুলোর একটি। ব্যাঙ্গাত্মক নকশাধর্মী এবং বিখ্যাত ‘বেস্টিয়ারি’ বা জীবজন্তু বিষয়ক রচনাসহ তাঁর সমগ্র সাহিত্যকর্ম তাঁর আরেক বন্ধু, ল্যাটিন আমেরিকার সাহিত্য জগতের আরেক বিশিষ্ট ব্যাক্তিত্ব, হুয়ান  রুলফো-র সাহিত্যকর্মের সঙ্গে তুলনীয়, অবিশ্যি এ কথা অনস্বীকার্য যে, একই রাজ্যে এবং একই বছরে জন্মগ্রহণকারী রুলফো, সামগ্রিক বিচারে, কথা সাহিত্যের অঙ্গনে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার প্রতিনিধি ।

অনুবাদক:
অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। 
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ‘নিঃসঙ্গতার একশ বছর’, ইয়স্তেন গার্ডারের  ‘সোফির জগৎ’, আইজাক আসিমভের ‘ফাউন্ডেশন সিরিজ’সহ উল্লেখযোগ্য বহুসংখ্যক অনুবাদকর্মের স্রষ্টা তিনি। 
সম্পাদিত পত্রিকা: তরজমা

কোন মন্তব্য নেই

enjoynz থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.