বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

অনেক দিন - নির্ঝর নৈঃশব্দ্য



অনেক দিন আগের কথা—তখন আমি বনের বিদ্যালয়ে ছবি আঁকা শিখতাম। বিদ্যালয়ে যেতে বাঁপাশে আকাশগামী মিনার। তার চূড়ায় একটা আনারস পাতার করাতে বসে আকাশকে পরিহাস করতো। মিনারের পাশেই ছিলো দীঘল এক স্বর্ণচাঁপার বন। সেইবনে একদিন ফুল এলো, সেই ফুল ঘ্রাণ ছড়ালো পৃথিবীর সকল হাওয়ায়। সেই ঘ্রাণের বীজে দশমাস দশদিন পর আমার বুকের ভিতর হুহু করে একটি পাখির জন্ম হলো।

তারপর প্রতিদিন চাঁপাবনের পাশ দিয়ে যেতে যেতে আমি মরে যেতাম। তারপর চাঁপাবনে বারোমাস বর্ষাকাল। তারপর চাঁপাবনে বারোমাস ফুল ফোটে। তারপর চাঁপাবনে বারোমাস মন কেমন করা ঘ্রাণ।

বনের সেই বিদ্যালয় ছেড়ে এসেছি আমি আরো আরো বছর আগে। কিন্তু সেই স্বর্ণচাঁপার বন আমার রক্তের ভিতর বিস্তারিত হয়েছে আরো তিনলক্ষ তেরো বর্গমাইল। আমার ফুসফুসের দখল নিয়েছে সেই ঘ্রাণের কণ্টক।

এখনো আকণ্ঠ তৃষ্ণায় আমি মরে যাই, মরে যাই। এখনো ওই চাঁপাবন আমাকে বিবশ করে, কেবল চোখদুটি জাগিয়ে রাখে। এখনো ওই রতিপুষ্প আমার রক্তকে উত্থিত করে মহাশূন্যের দিকে। এখনো ওই ঘ্রাণের কাঁটা আমাকে বিদীর্ণ করে ঘুম যায় উত্তরের গ্রহে।

প্রিয় হুহুপাখি প্রাণরাক্ষস, এ কেমন বনবাস আমার?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন